ইরানের বিরুদ্ধে জয় দাবি নেতানিয়াহুর, আপনাদের মতামত জানতে চাই- ? তবে জরিপ বলছে অনেক ইসরায়েলি তাকে বিশ্বাস করেন না
মার্চ মাসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এমন একটি যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়া
থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন যেটি সুফল বয়ে আনছিল। তার এই সিদ্ধান্তকে ওই সময় 'রাজনৈতিক
আত্মহত্যা' বলে বর্ণনা করেছিলেন কোনো কোনো বিশ্লেষক।
এটি ছিল গাজা যুদ্ধবিরতি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্প
ক্ষমতা নেওয়ার আগেই তার দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্ভব
হয় এবং হামাসের বন্দিদশা থেকে কয়েক ডজন জিম্মি মুক্তি পায়, যার বিনিময়ে ইসরায়েলি
কারাগার থেকে শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকেও মুক্তি দেওয়া হয়।
পরবর্তী পর্যায়ে আরও জিম্মিকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আলোচনার মাধ্যমে
যুদ্ধের সমাপ্তির আগে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করার কথা ছিল।
সংঘাতে ক্লান্ত ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে
ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের সমাপ্তির কথা ভাবছিল। কিন্তু যুদ্ধ শেষ করতে চাননি নেতানিয়াহু।
তিনি গাজাজুড়ে আবার আক্রমণ শুরু করার নির্দেশ দেওয়ার সময় বলেছিলেন,
হামাস "সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত" লড়াই চলবে।
গাজায় অবশিষ্ট জিম্মিদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তনকে একটি গৌণ বিষয়
বলে মনে হয়েছিল তখন। (গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যে প্রভাব পড়েছে তা বিবেচনাতেই
নেওয়া হয়নি)
অনেক ইসরায়েলি, বিশেষ করে জিম্মিদের পরিবারগুলো এই সিদ্ধান্তে
ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়।
তারা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন যে তিনি তাদের স্বজনদের
(যারা জিম্মি আছে) নিরাপত্তা এবং জাতির বৃহত্তর কল্যাণের চেয়ে নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্বকে
অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
জরিপে দেখা গেছে, "বিবির" (নেতানিয়াহু এই নামেও পরিচিত)
জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে এবং তিনি অতি-ডানপন্থি এবং তিনি গোঁড়া ধর্মীয় দলগুলোর কট্টর
মন্ত্রীদের দ্বারা পরিচালিত একটি বিচ্ছিন্ন সরকারকে একত্রিত করতে লড়াই করছেন।
তিন মাস পর, নেতানিয়াহু তার শত্রুপক্ষ ইরানের বিরুদ্ধে এক অসাধারণ
সামরিক বিজয়ের দাবির ওপর ভাসছেন। জানা গেছে, তিনি এখন আগাম নির্বাচন দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রী
হিসেবে আরও একটি মেয়াদের কথা ভাবছেন।
গত সপ্তাহের শুরুতে এক সংবাদ সম্মেলনে, ৭৫ বছর বয়সী এই নেতা, যিনি
ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রধানমন্ত্রী, তিনি বলেছেন যে তার এখনো
"অনেক মিশন" সম্পন্ন করা বাকি আছে এবং যতদিন ইসরায়েলের 'জনগণ' তাকে চাইবে
ততদিন তিনি তা করতে চাইবেন।
সপ্তাহের শেষের দিকে এসে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করে দেওয়ার
(যেটি এখনো নিশ্চিত নয়) দাবিকে একটি 'সুযোগের জানালা' হিসেবে উপস্থাপন করেন তিনি। এই
সুযোগ "হাতছাড়া করা উচিত নয়" এবং কেবল তিনিই গাজা থেকে "জিম্মিদের মুক্ত
করা এবং হামাসের পরাজয়" নিশ্চিত করতে পারবেন বলেও উল্লেখ করেছেন। বৃহত্তর আঞ্চলিক
ঐকমত্যের ভিত্তিতেই এগুলো করতে পারবে বলে তিনি যুক্তি দেন।
কিন্তু আগাম নির্বাচন আহ্বান করা একটি বড় ঝুঁকি হবে এবং সাম্প্রতিক
জরিপ অনুসারে, নেতানিয়াহু ইরানের সাথে ১২ দিনের সংঘাত থেকে জনপ্রিয়তায় যতটা 'উল্লম্ফন'
আশা করেছিলেন ততটা উপভোগ করতে পারেননি।
No comments