ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ: বিশ্ববাজারে বড় ধরনের দরপতনের মুখে তেলের বাজার
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমায় বিশ্ববাজারে তেলের দাম বড় ধরনের পতনের মুখে পড়েছে। ইরান-ইসরায়েল সংঘাত তেমন কোনো সরবরাহ বিঘ্ন না ঘটানোয় ‘রিস্ক প্রিমিয়াম’ কার্যত শূন্য হয়ে গেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর আরব নিউজ
শুক্রবার (২৭ জুন) পর্যন্ত ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৫১ সেন্ট বা ০.৭৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৬৮.২৪ ডলার, আর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ওয়াইটিআই) তেলের দাম ৫১ সেন্ট বা ০.৮ শতাংশ বেড়ে হয় ৬৫.৭৫ ডলার। তবে সপ্তাহজুড়ে দুই বেঞ্চমার্কই প্রায় ১২ শতাংশ দাম হারিয়েছে যা মার্চ ২০২৩ সালের পর সবচেয়ে বড় সাপ্তাহিক পতন।
রাইস্ট্যাড এনার্জির বিশ্লেষক জানিভ শাহ বলেন, “প্রায় এক সপ্তাহ আগের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এখন বাজারে কোনো প্রভাব রাখছে না। এখন বাজার আবার মৌলিক চাহিদা-জোগানভিত্তিক গতি ফিরে পাচ্ছে।”তেল বাজারের জন্য আগামী ৬ জুলাইয়ের দিকে নজর রাখছেন সবাই। ওই দিন ‘ওপেক’ সদস্যরা আগস্ট মাসের উৎপাদন কোটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
শাহ জানান, বাজার কাঠামো ও মজুদের ভিত্তিতে আরও মাসের জন্য দ্রুত উৎপাদন হ্রাসের সুযোগ থাকলেও মূল নির্ধারক হবে গ্রীষ্মকালীন তেলের চাহিদা কতটা শক্তিশালী।
তেলের দামে সামান্য ঊর্ধ্বগতি এসেছে একাধিক মজুদ রিপোর্টে মধ্যবর্তী জ্বালানির ঘাটতির ইঙ্গিত পাওয়ায়। মার্কিন জ্বালানি তথ্য সংস্থার (ইআইএ) তথ্যমতে, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত তেল ও জ্বালানি মজুদ হ্রাস পেয়েছে এবং রিফাইনিং কার্যক্রম বেড়েছে। আমস্টারডাম-রটারডাম-আন্টওয়ার্প (এআরএ) অঞ্চলের স্বাধীনভাবে মজুদ রাখা গ্যাস অয়েলের পরিমাণ এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এদিকে সিঙ্গাপুরেও মধ্যবর্তী জ্বালানি মজুদ কমেছে, কারণ সেখানে নেট রপ্তানি সপ্তাহভিত্তিক বেড়েছে।
বিশ্বের শীর্ষ তেল আমদানিকারক চীন জুন মাসে ইরান থেকে রেকর্ড পরিমাণ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। শিপ-ট্র্যাকিং সংস্থা ‘ভোরটেক্সা’ জানায়, ১–২০ জুনের মধ্যে চীন প্রতিদিন ১৮ লাখ ব্যারেলেরও বেশি ইরানি তেল আমদানি করেছে যা তাদের রেকর্ড অনুযায়ী সর্বোচ্চ। সংঘাত শুরুর আগেই এই চালানগুলো রওনা দিয়েছিল এবং তখন চীনের স্বাধীন রিফাইনারিগুলোর চাহিদাও বেড়েছিল।
No comments